দরুদ শরীফ বাংলা উচ্চারণ, অর্থ ও ফজিলত

দরুদ শরীফ মুসলিম ধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং পবিত্র দোয়া। এটি আল্লাহর প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর প্রতি ভালোবাসা, সম্মান ও দোয়ার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে পাঠ করা হয়। দরুদ শরীফ পাঠের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে নবীজীর জন্য শান্তি, বরকত ও রহমত প্রার্থনা করা হয়, যা মুসলিম ধর্মীয় রীতি অনুসারে অত্যন্ত পূণ্যময় একটি কাজ।

দরুদ শরীফের বাংলা উচ্চারণ

“আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন ওয়ালা আ’লে মুহাম্মাদ, কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আ’লে ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামিদুম মজিদ।”

এই দরুদটি পড়ার মাধ্যমে আমরা মহান আল্লাহর কাছে নবী মুহাম্মদের (সঃ) প্রতি দোয়া জানাই এবং নবী ইব্রাহিম (আঃ) এর সাথে তুলনা করি। এটি অত্যন্ত পূণ্যময় ও গুরুত্বপূর্ণ দরুদ শরীফ হিসেবে মুসলিমদের মধ্যে বহুল প্রচলিত।

দরুদ শরীফের অর্থ

“হে আল্লাহ! আপনি আমাদের নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এবং তাঁর পরিবারবর্গের উপর রহমত বর্ষণ করুন, যেমনভাবে আপনি ইব্রাহিম (আঃ) এবং তাঁর পরিবারবর্গের উপর রহমত বর্ষণ করেছিলেন। আপনি সর্বশ্রেষ্ঠ, পরিপূর্ণ প্রশংসার অধিকারী।”

এই দরুদ শরীফে নবীজীর প্রতি আল্লাহর রহমত ও বরকত প্রার্থনা করা হয়, যা সকল মুসলিমের জন্য অত্যন্ত বরকতময়।

দরুদ শরীফের ফজিলত

দরুদ শরীফ পাঠের অসংখ্য ফজিলত রয়েছে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত নিম্নে তুলে ধরা হলো:

১. গুনাহ মাফ: দরুদ শরীফ পাঠ করলে আল্লাহ তায়ালা পাঠকের ছোট-বড় সকল গুনাহ ক্ষমা করেন এবং তাকে জান্নাতের পথে চলার সুযোগ দেন।

২. মনের শান্তি: দরুদ পাঠের মাধ্যমে মন শান্ত থাকে এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়।

৩. দোয়া কবুল: দরুদ পাঠকারী ব্যক্তির দোয়া দ্রুত কবুল হয়। আল্লাহ তায়ালা দরুদ পাঠকারীর জন্য পৃথিবী ও আখিরাতের কল্যাণ নিশ্চিত করেন।

৪. ফেরেশতাদের ভালোবাসা: দরুদ শরীফ পাঠ করলে আল্লাহর ফেরেশতারা পাঠকারীর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং তাঁর ভালোবাসার মানুষ হিসেবে গণ্য করেন।

৫. দ্বিগুণ নেকি লাভ: যে ব্যক্তি দরুদ শরীফ পাঠ করেন, তার জন্য আল্লাহ তায়ালা দুই গুণ নেকি লিখে দেন এবং দুই গুণ গুনাহ মাফ করেন।

৬. কিয়ামতের দিন বিশেষ মর্যাদা: কিয়ামতের দিন যারা নিয়মিত দরুদ শরীফ পাঠ করেছেন, তারা নবীজীর (সাঃ) সুপারিশ পেয়ে থাকবেন এবং তাদের জন্য জান্নাতের বিশেষ দোয়ার ব্যবস্থা থাকবে।

দরুদ শরীফের গুরুত্ব

ইসলামের প্রতিটি দিকেই দরুদ শরীফের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। মুসলিম উম্মাহর জন্য নবীজীর প্রতি দরুদ পাঠ করা যেমন অত্যন্ত পুণ্যময়, তেমনি এটি আল্লাহর ভালোবাসা ও রহমত লাভের একটি বড় মাধ্যম। দরুদ পাঠ করলে মানুষ আল্লাহ ও তাঁর প্রিয় নবীজীর সঙ্গে মানসিক ও আধ্যাত্মিকভাবে আরও বেশি সংযুক্ত হতে পারে।

কেন দরুদ শরীফ পাঠ করা উচিত?

দরুদ শরীফ পাঠের গুরুত্ব আল্লাহর বান্দার জন্য অত্যন্ত বেশি। মহানবী মুহাম্মদ (সঃ) নিজে তার উম্মতদের দরুদ পাঠের জন্য উৎসাহিত করেছেন। আল্লাহর রাসূল (সঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি একবার আমার উপর দরুদ পাঠ করে, আল্লাহ তাআলা তার উপর দশটি রহমত বর্ষণ করেন, দশটি গুনাহ মাফ করেন এবং দশটি মর্যাদা বৃদ্ধি করেন।”

উপসংহার/শেষ কথা

দরুদ শরীফ পাঠ করা আল্লাহর নৈকট্য লাভের এক অসাধারণ মাধ্যম। এটি পাঠের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সঃ) এর প্রতি আমাদের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করতে পারি এবং আল্লাহর অপার রহমত ও বরকত লাভ করতে পারি। এটি একটি সহজ এবং পূণ্যময় ইবাদত যা প্রতিদিনই আমাদের জীবনের অংশ হওয়া উচিত।

প্রশ্ন ও উত্তর

১. দরুদ শরীফ কিভাবে পড়া হয়?

দরুদ শরীফ পড়া হয় আল্লাহর নবী মুহাম্মদ (সঃ) এর প্রতি দোয়া ও বরকত প্রার্থনা করে। এর বাংলা উচ্চারণ হলো: “আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন ওয়ালা আ’লে মুহাম্মাদ।”

২. দরুদ শরীফ পাঠের ফজিলত কি?

দরুদ শরীফ পাঠের ফজিলত হলো গুনাহ মাফ, মনের শান্তি, দোয়া কবুল, দ্বিগুণ নেকি লাভ, ফেরেশতাদের ভালোবাসা এবং কিয়ামতের দিন বিশেষ মর্যাদা পাওয়া।

৩. দরুদ শরীফ কোন সময়ে বেশি ফজিলতপূর্ণ?

দরুদ শরীফ যেকোনো সময়ে পাঠ করা যায়, তবে বিশেষ করে শুক্রবার, নামাজের পর এবং দোয়া করার সময় এটি বেশি ফজিলতপূর্ণ।

৪. দরুদ শরীফ পাঠ করার উপকারিতা কি?

দরুদ শরীফ পাঠের মাধ্যমে আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভ হয়, মনের শান্তি আসে এবং দোয়া দ্রুত কবুল হয়।

৫. দরুদ শরীফ পাঠে কি গুনাহ মাফ হয়?

হ্যাঁ, নিয়মিত দরুদ শরীফ পাঠ করলে আল্লাহ তাআলা পাঠকারীর ছোট-বড় গুনাহ মাফ করেন।


দরুদ শরীফ, দরুদ শরীফের ফজিলত, দরুদ শরীফ অর্থ, দরুদ শরীফ পাঠ, দরুদ পাঠের উপকারিতা, দরুদ শরীফ বাংলা উচ্চারণ, দরুদ শরীফ পড়া, ইসলামিক দোয়া, ফজিলতপূর্ণ দোয়া, আল্লাহর রহমত, নবীজীর প্রতি দোয়া, কিয়ামতের দিন, দরুদ শরীফের ফজিলত, নবীজী (সঃ) এর প্রতি দোয়া, আল্লাহর নৈকট্য, দোয়া কবুল, গুনাহ মাফ, মনের শান্তি, আল্লাহর বরকত, ফেরেশতাদের ভালোবাসা, দ্বিগুণ নেকি লাভ, ইসলামিক দোয়া বাংলা, ইসলামিক প্রার্থনা, দরুদ শরীফ ফজিলত, দরুদ শরীফের উপকারিতা, কিয়ামতের মর্যাদা, নবী মুহাম্মাদ, নবী মুহাম্মদ, দরুদ শরীফ পড়ার নিয়ম, দরুদ শরীফ কখন পড়া উচিত, ইসলামic darud